সূর্যশিখা নিউজ ডেস্ক: রানাঘাটে গয়নার শোরুমের এক নিরাপত্তাররক্ষী থানায় ফোন করে জানান ডাকাত ঢুকে পড়েছে। একটুও সময় নষ্ট না করে গাড়ির চালক-সহ চার জন লাঠিধারী পুলিশকে নিয়ে এএসআই রতন রায় ছুটে যান ঘটনাস্থলে।দিনেদুপুরে শহরের রাস্তায় গুলির শব্দ। জানলা দিয়ে উঁকি দিচ্ছিলেন কয়েক জন গৃহস্থ। তাঁদেরই কেউ এক জন মোবাইলে যে ভিডিয়ো করলেন, তাতে দেখা গেল রিভলভার হাতে সশস্ত্র কয়েক জনের পিছু নিয়েছেন এক জন। গায়ে পুলিশের উর্দি ছিল না। তাই স্থূলকায় মানুষটি কে, তা কেউই বোঝেননি। তবে রানাঘাটে ডাকাতদলের চার সদস্যকে গ্রেফতারের পর ওই ‘মোটা লোকটাকে’ নিয়ে কৌতূহল বেড়েছে। তিনি রতন রায়। রানাঘাট থানার এএসআই। দুষ্কৃতীদের অত্যাধুনিক অস্ত্র থেকে ছোড়া গুলির সামনে যিনি অকুতোভয়। যিনি জং ধরা রিভলভার দিয়ে গুলির প্রত্যুত্তর দিয়েছেন।ওজন ১০২ কিলোগ্রামের আশপাশে। গড়পড়তা শারীরিক উচ্চতায় এই অতিকায় শারীরিক গঠন নিয়ে প্রায়শই সহকর্মীদের ঠাট্টা-তামাশা শোনেন। তবে মঙ্গলবার দুপুরে যে কাণ্ড তিনি ঘটিয়েছেন, তাতে পুলিশ সুপারও রতনকে নিয়ে গর্বিত। ব্যারাকপুর সেন্টারের ১৯৯৬ ব্যাচের কনস্টেবল থেকে সদ্য পদোন্নতি পাওয়া এএসআই রানাঘাটে ডাকাতদলের ছোড়া মুহুর্মুহু গুলির সামনে পড়েও পিছু হঠেননি। বরং চার দুষ্কৃতীকে প্রায় ৫০০ মিটার ধাওয়া করেছেন। দু’জনকে ঘায়েল করেছেন তাঁর হাতের ওই জং ধরা রিভলভার দিয়ে। রতন বলছেন, তখন কার হাতে কোন অস্ত্র কিছুই নাকি তাঁর মাথায় ছিল না। এএসআইয়ের কথায়, ‘‘একটাই কথা মাথায় ঘুরছিল— পুলিশের সম্মান।’’ তাঁর গুলি পায়ে লেগে দুই ডাকাত ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় জুয়েলারি শোরুম থেকে লুট হয়ে যাওয়া বহুমূল্যের গয়না।মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর রিভলভার হাতে ডাকাতদলের পিছু নেওয়া ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই শুভেচ্ছার বন্যা বইছে। অত্যাধুনিক অস্ত্রে ‘সজ্জিত’ ডাকাতদলের সঙ্গে ‘অসম লড়াইয়ে’ অসাধ্যসাধন করে রতন বলছেন, ‘‘পুলিশের মান বাঁচাতেই হতো।’’তার পর গ্রেফতার হয় আহত দুই ডাকাত-সহ মোট চার জন। উদ্ধার হয় দুটি মোটর বাইক, নগদ তিন লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, চারটি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র, একাধিক ভুয়ো-নথি। এএসআই রতন রায়কে নিয়ে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কে কান্নান বলেন, ‘‘রতন-সহ গোটা দল যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে, তার জন্য প্রত্যেককে জেলা পুলিশ সুপার হিসাবে ধন্যবাদ জানালাম।
Total Post View : 116