দুলাল সিংহ; দক্ষিণ দিনাজপুরঃ কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীর কোলে চেপে জগন্নাথ দেব-এর দর্শন বৃদ্ধার, টানালেন রথের দড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশের কনস্টেবলের ব্যবহারে প্রশংসার ঝড় বালুরঘাটে৷ রবিবার রথযাত্রার দিন সারাদেশের পাশাপাশি বালুরঘাটও মেতেছিল রথযাত্রা উৎসবে। জগন্নাথ দেব-এর দর্শন ও রথের দড়িতে টান দিতে উৎসুক ছিলেন আট থেকে আশি প্রত্যেকেই। বালুরঘাটের বিশ্বাসপাড়া এলাকার বৃদ্ধা মায়া রানি দত্ত-রও মনের ইচ্ছা ছিল এমনটাই। রবিবার দুপুরে বালুরঘাটের দিপালী নগর এলাকার জগন্নাথ বলরাম শুভদ্রা-র রথ যখন বিশ্বাস পাড়া মোড় এলাকা দিয়ে সাধনা মোড় অভিমুখে যাচ্ছিল সেই সময় পরিবারের লোককে সাথে নিয়ে মায়ারানি দত্ত জগন্নাথ দেব-এর দর্শন ও রথের দড়িতে টান দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসেন। যদিও রথের গড়ন্ত চাকার গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে না হাটতে পারা বৃদ্ধা মায়ারানি দত্ত জগন্নাথ দেব-এর দর্শন করতে না পেরে মন খারাপ ছিল বৃদ্ধা মায়ারানি দত্ত-র। এরপর তিনি তার মনের ইচ্ছার কথা কর্তব্যরত পুলিশ কর্মী দেবাশিষ সাহা-কে জানালে তৎক্ষনাৎ ঐ পুলিশ কর্মী মায়ারানি দত্ত নামের ঐ বৃদ্ধাকে পাজাকোলা করে রথের দিকে ছুটতে থাকেন। এরপর তিনি ঐ বৃদ্ধাকে জগন্নাথ দেব-এর দর্শন করান ও রথের দড়ি টানান। মনের ইচ্ছা পূরণ হওয়ায় আপ্লুত মায়ারানি দত্ত। অপরদিকে এক বৃদ্ধার মনের ইচ্ছা পূরণে পুলিশ কর্মীর এহেন ব্যবহারে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ পথ চলতি মানুষরা। জানা গেছে দেবাশিষ সাহা নামের পুলিশ কনস্টেবল বালুরঘাটের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ লাইনে পুলিশ কর্মী হিসাবে নিযুক্ত রয়েছেন। মায়ারানি দত্ত বলেন আমাকে নিজের ছেলের মত করে কোলে তুলে নিয়ে জগন্নাথ দর্শন করিয়েছে - রথের দড়ি টানিয়েছে পুলিশ কর্মী, আমি আনন্দিত। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশের মানবিক এই ব্যবহার নতুন নয়। বালুরঘাট শহরে একাকী থাকা প্রবীনদের পাশে দাঁড়াতে একদা বালুরঘাটে প্রণাম কর্মসূচী চালু করেছিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ। কোভিড পরিস্থিতিতে এই প্রণাম কর্মসূচী চলাকালীন বালুরঘাট শহরের একাকী থাকা প্রবীণ মানুষদের ঔষধ নিয়ে আসা হোক বা তাদের বাড়িতে রান্নার গ্যাস পৌছে দেওয়া বা বাড়ির বাজার করে দেওয়া সবেতেই ঘরের ছেলের ন্যায় ভূমিকা পালন করতে দেখা গিয়েছিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পুলিশ কর্মীদের। যা রাজ্যবাসীর কাছে প্রশংসিত হয়েছিল।