দক্ষিণ দিনাজপুর: বালুরঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উঠা কাটমানির অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। উঠা অভিযোগ উড়িয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে পাল্টা এজেন্সির মালিকের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করার এবং পৌরসভাগতভাবে পদক্ষেপ গ্রহণের হুশিয়ারি চেয়ারম্যান অশোক মিত্র-র। অপরদিকে কাটমানির অভিযোগে নিজের অবস্থানে অনড় এজেন্সির মালিক। বালুরঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র-র সাংবাদিক বৈঠকের পর উল্টো দিকে এজেন্সির মালিক সৌমেন সরকার তুললেন আরও এক বিস্ফোরক অভিযোগ। উল্লেখ সঠিক সময়ে বেতন না পাওয়ায় অভিযোগ তুলে শনিবার পথ বাতি বন্ধ রেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে বালুরঘাট পৌরসভার সঙ্গে চুক্তিবন্ধ এজেন্সির কর্মীরা। ঘটনার পরে চুক্তিবদ্ধ ঐ এজেন্সির কোন বিল বকেয়া নেই বলে জানান বালুরঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র। বিষয়টি সামনে আসার পর বালুরঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১০ লক্ষ টাকা কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তোলেন ঐ এজেন্সির মালিক সৌমেন সরকার। রীতিমত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ করেন তিনি। শুধু তাই নয় অভিযোগ বিষয়ে সিআইডি-র তদন্তের মুখোমুখি হতেও তিনি প্রস্তুত বলে তিনি ঐ চিঠিতে উল্লেখ করেন। অভিযোগ কথা চাউড় হতেই তোলপাড় পড়ে যায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। প্রশ্ন তুলতে শুরু করে বিরোধীরা। যার পরে বুধবার দুপুরে বালুরঘাট পৌরসভার সূবর্ণতট সভাগৃহে সাংবাদিক বৈঠক করেন বালুরঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র। উপস্থিত ছিলেন বালুরঘাট পৌরসভার পৌরাধ্যক্ষ পরিষদের সদস্য বিপুল কান্তি ঘোষ সহ কয়েকজন কাউন্সিলার। এদিনের এই সাংবাদিক বৈঠকে অশোক মিত্র নিজের বিরুদ্ধে উঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবী করে জানান চুক্তিবদ্ধ এজেন্সির মালিক বালুরঘাট পৌরসভার সঙ্গে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন। চেয়ারম্যান অশোক মিত্র এবং পৌরাধ্যক্ষ পরিষদের সদস্য বিপুল কান্তি ঘোষ-এর বক্তব্য ইলেকট্রিক চুল্লিতে ট্রান্সফরমার বসানো এবং বালব কেনার খরচের বিল বাবদ ৯ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পৌরসভার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই দিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ অভিযোগ উত্থাপনকারী এজেন্সির মালিকের বিরুদ্ধে উনাদের অভিযোগ চুক্তিবদ্ধ এজেন্সিকে টাইমার মেশিন বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কিন্তু এখনও ঐ এজেন্সি টাইমার মেশিন বসানোর কাজ না করায় ইতিমধ্যেই ঐ এজেন্সিকে ৪ বার শোকজ করা হয়েছে, যে কারনে চুক্তিবদ্ধ এজেন্সির চুক্তি বাতিল করা হতে পারে এমন আশঙ্কার কারনে বালুরঘাট পৌরসভার সাথে চুক্তিবদ্ধ এজেন্সির মালিক মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। ঐ এজেন্সির বিরুদ্ধে তিনি ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ তুলেছেন। অশোক মিত্র বলেন সৌমেন সরকার-এর বিরুদ্ধে আমি মানহানির মামলা করছি। অপরদিকে বালুরঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যানের সাংবাদিক বৈঠকের পর এদিন ফের বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন চুক্তিবদ্ধ এজেন্সির মালিক সৌমেন সরকার। তিনি বালুরঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলার অভিযোগ তুলেছেন। সৌমেন সরকার বলেন যথাক্রমে ৬ লক্ষ টাকা, ২ লক্ষ টাকা, ২ লক্ষ টাকা এই ৩টি ধাপে মোট ১০ লক্ষ টাকা কাটমানি দিয়েছেন। পথবাতি রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য তিনি ১০ লক্ষ টাকা কাটমানি দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয় এদিন আরও এক কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ তুলে সৌমেন সরকার বলেন বালুরঘাট পৌরসভার এমসিআইসি সদস্য বিপুল কান্তি ঘোষ তার কাছে ২ লক্ষ টাকার কাটমানি চেয়েছিলেন যে কাটমানির টাকা তিনি দেননি। অপরদিকে এই অভিযোগ প্রসঙ্গে বিপুল কান্তি ঘোষ বলেন পুরোপুরি মিথ্যা কথা, উনি মনগড়া কথা বলছেন, উনাকে ডাক্তার দেখানো উচিৎ, উনার দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে বলে ধরনের কথা বলছেন। সেই সঙ্গে তিনি পাল্টা অভিযোগ তুলে বলেন সৌমেন সরকার অন্যান্য একাধিক একাধিক মানুষের কাছে টাকা পান বলে দাবী করে চলেছেন। সবমিলিয়ে কাটমানির অভিযোগ - পাল্টা অভিযোগে বর্তমানে সরগরম দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা।