এই মুহূর্তে এই বাংলায় জেলার খবর ভারতবর্ষ-বিশ্ব টুকরো খবর রকমারি জ্যোতিষ তন্ত্র-মন্ত্র যোগাযোগ বিজ্ঞাপন
×

নেতা-নেত্রীদের বুথে ভরাডুবিতে বালুরঘাটে তীরে এসে ডুবল তৃণমূলের তরী! লড়ে বিপ্লব-এর হার-এ ক্রমে জোরালো হচ্ছে দলীয় অন্তর্ঘাত তত্ব

...

Suryasikha News Admin


দক্ষিণ দিনাজপুর: নেতা-নেত্রীদের বুথে ভরাডুবি, সক্রিয় কর্মীদের বুথের লিডকে সম্বল করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই বিপ্লব-এর, ক্রমে জোরালো হচ্ছে দলীয় অন্তর্ঘাত তত্ব। বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে নিজের বুথেই পিছিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের ডজন ডজন নেতা, বিফলে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর ৪টি সভা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর প্রচার। জনসংযোগের অভাব না অন্তর্ঘাতের কারনে হার! খতিয়ে দেখবে দল। গত ৪ঠা জুন দেশের আঠারোতম লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর রাজ্যের একের পর এক লোকসভা আসন যখন তৃণমূলের দখলে চলে যাচ্ছিল সেই সময় উল্টো চিত্র ছিল বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে। বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে ১০৩৮৬ ভোটে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার। লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের পরাজয়ের কারণ নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। এরই মাঝে তৃণমূলের দলীয় সূত্রে জানা গেছে সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীদের নিজেদের বুথ এলাকাতেই পিছিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে জানা গেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি তথা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি অম্বরিশ সরকার-এর নিজস্ব ৮৮নং বুথে ৫২২ ভোটে, রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক গৌতম দাস-এর নিজস্ব ১৬১নং বুথে ২৪৫ ভোটে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক গুহ-র নিজস্ব ৭৮নং বুথে ২৭৮ ভোটে, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সদস্য মৃণাল সরকার-এর নিজস্ব ৮নং বুথে ১৩৬ ভোটে, নির্বাচন কমিটির সদস্য তথা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সদস্য কৌশিক মাহাতো-র নিজস্ব ১৩৯নং বুথে ১৭১ ভোটে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অমরনাথ ঘোষ-এর নিজস্ব ২০নং বুথে ৩৭৮ ভোটে, শিক্ষক নেতা ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সদস্য সুকলাল হাসদা-র নিজস্ব ১৪৩নং বুথে ৩৮৩ ভোটের লিড পান বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার। প্রাপ্ত ঐ তথ্য অনুযায়ী দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একাধিক ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতিদের নিজস্ব বুথেও হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের ভরাডুবি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে তৃণমূল কংগ্রেসের তপনের ব্লক সভাপতি সুব্রত ধর-এর নিজস্ব ৩৭নং বুথে ১৯৬ ভোটের লিড পেয়েছে বিজেপি, কুমারগঞ্জের ব্লক সভাপতি উজ্বল বসাক-এর নিজস্ব ৯৮নং বুথে ৩৪৮ ভোটের লিড পেয়েছে বিজেপি, বালুরঘাট ব্লকের ব্লক সভাপতি কৌশিক চৌধুরী-র নিজস্ব ১৭১নং বুথে ৪৪৯ ভোটের লিড পেয়েছে বিজেপি, হিলি ব্লকের ব্লক সভাপতি মিহির সরকার-এর বাসভবন সংলগ্ন ১৭৭ ও ১৭৮নং বুথে যথাক্রমে ২৮৪ ও ২৫৯ ভোটের লিড পেয়েছে বিজেপি। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তৃণমূলের নেতাদের নিজস্ব বুথের এহেন রেজাল্ট সামনে আসতেই শুরু হয়েছে জেলার নীচু তলার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে জোর গুঞ্জন। তবে কি জনসংযোগের বুলি আওড়ানো নেতাদের নিজস্ব বুথ এলাকায় জনসংযোগের অভাব রয়েছে - তবে কি বর্ষীয়ান নেতা বিপ্লব মিত্র-র হারের পিছনে রয়েছে কাজ করেছে দলীয় অন্তর্ঘাত, এহেন প্রশ্ন এখন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের মনে দানা বাধতে শুরু করেছে। যদিও বুথে খারাপ রেজাল্ট প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অম্বরিশ সরকার বলেন পিছিয়ে থাকার নানা কারণ থাকতে পারে। তবে মদ্যাকথা এটুকু বলা যেতে পারে, যে আমরা ভোটারদের কাছে সঠিক অর্থে পৌঁছাতে পারিনি, তাদের মন জয় করতে পরিনি। কেন পারিনি সেটা পর্যালোচনা করে দেখতে হবে। তবে প্রত্যেক নেতৃত্বের নিজের এলাকার মানুষের পাশে সবসময় থাকতে না পারাটাও একটা কারণ। সেরকম হলে আগামীতে কিভাবে মানুষগুলোর পাশে আরও বেশি বেশি করে থাকা যাবে সেটা দেখতে হবে। তবে প্রশ্ন যদি থাকে গ্রহণযোগ্যতায়, তাহলে সমস্যা। তৃণমূল নেতাদের নিজের বুথগুলিতে যখন ভরাডুবি তৃণমূল কংগ্রেসের তখন উল্টো দিকে তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মীদের বুথের ফলাফলের চেহারাটা অন্যরকম। উদাহরণ হিসাবে কুমারগঞ্জের ৯৯নং বুথ ও ১২৫নং বুথের ফলাফল উল্লেখযোগ্য । উল্লেখিত দুটি বুথেই ৬৩১ ভোটের লিড রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। যে পরিসংখ্যান দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের বক্তব্য সক্রিয় কর্মীদের বুথের লিডকে সম্বল করেই বিজেপিকে জোর টক্কর দিয়েছে বিপ্লব মিত্র। নেতাদের বুথে ভরাডুবির তথ্য সামনে আসার পর বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর পরাজয়ের কারন হিসাবে দলীয় অন্তর্ঘাতের আশঙ্কাকে এড়াতে পারেননি খোদ তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল-ও। সুভাষ ভাওয়াল বলেন কারা কারা জড়িত সেটা আমরা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না, তবে সন্দেহ এর মধ্যে অনেকে আছে। তবে জেলার দলীয় নেতাদের অনেকেই যে জনসংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন সে কথা তিনি কার্যত স্বীকার করে আক্ষেপের সুরে বলেন যদি সক্রিয় হত তাহলে এই সিটে আমাদেরকে হারতে হত না। তিনি জানিয়েছেন তারা বিষয়টি দলের উর্দ্ধতন নেতৃত্বকে জানাবেন। তিনি আরও জানিয়েছেন যে নির্বাচনে দলের নেতাদের পারফরম্যান্স কেমন ছিল তা ইতিমধ্যেই দলের উর্দ্ধতন নেতৃত্ব তাদের কাছে জানতে চেয়েছে।

Tag: Breaking news, Suryasikha news

Total Post View : 58708


সম্পর্কিত খবর