দক্ষিণ দিনাজপুর: বিগত ৫ বছরেও মেলেনি সাংসদ তহবিলের অর্থ, অর্থাভাবে বালুরঘাটে প্রতিস্থাপিত না হয়ে জঙ্গলে পড়ে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান, লজ্জিত বালুরঘাট! ভারতীয় বায়ুসেনা, ভারতীয় সেনা এবং ভারতীয় নৌ সেনার পরাক্রম বিশ্ব বন্দিত এবং দেশের নবপ্রজন্মের অন্যতম অনুপ্রেরণার উৎস্য। ১৯৭১ সালের ভারত - পাকিস্তান যুদ্ধে পাকিস্তান সেনার কাছ থেকে ছিনিয়ে আনা ট্যাঙ্ক ভারতীয় সেনার পরাক্রমের সঙ্গে যুদ্ধ জয়ের নিদর্শন হিসাবে বালুরঘাট শহরের রঘুনাথপুর এলাকায় স্থাপিত। ১৯৭১ সালের ভারতের যুদ্ধ জয়ে বড় ভূমিকা ছিল ভারতীয় বায়ু সেনারও। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জেলা সৈনিক বোর্ড চেয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনার একটি বিমানকে সীমান্ত শহর বালুরঘাটে নিয়ে এসে  প্রতিস্থাপিত করে ভারতীয় বায়ুসেনার সেই বীরগাথাকে দেশের নবপ্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে। এরপর ভারতীয় বায়ুসেনার ইস্টার্ন এয়ার হেড কম্যান্ডের কাছে আবেদনের ভিত্তিতে ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে তৎকালীন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জেলা সৈনিক বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তথা ভারতীয় বায়ুসেনার প্রাক্তন স্কোয়ার্ড্রন লিডার সত্যব্রত চক্রবর্তী-র প্রচেষ্টায় সূদুর  হায়দ্রাবাদ থেকে বালুরঘাটে এসে পৌছায় ভারতীয় বায়ুসেনার দীপক এইচ পি টি-৩২ জেট প্রপেলার এয়ারক্র্যাফট। ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান বালুরঘাটে আসতেই বিমান দেখতে এবং ভারতের গৌরবোজ্বল ইতিহাস জানতে খুদে থেকে স্কুল পড়ুয়ারা প্রত্যহ ভীড় জমাতে শুরু করে জেলা সৈনিক বোর্ডের অফিস চত্বরে। ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে বায়ুসেনায় যোগদান ইচ্ছা জাগিয়ে তুলে নবপ্রজন্মের মধ্যে দেশ সেবার বীজ রোপনে বিমানটিকে রঘুনাথপুর এলাকায় জেলা সৈনিক বোর্ডের অফিস চত্বরেই প্রতিস্থাপন এবং প্রতিস্থাপন স্থলটির সৌন্দর্য্যায়নের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা সৈনিক বোর্ড। বিমানটিকে প্রতিস্থাপন ও প্রতিস্থাপন স্থলের সৌন্দর্য্যায়নের জন্য মাত্র প্রায় ৩ লক্ষ টাকার প্রস্তাব পাঠিয়ে সাংসদ তহবিলের অর্থ আবেদন করে ২০১৯ সালে জেলা শাসকের দ্বারস্থ হয় জেলা সৈনিক বোর্ড। কিন্তু সাংসদ তহবিলের টাকা না মেলায় ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও প্রতিস্থাপিত হয়নি বায়ুসেনার বিমানটি। বর্তমানে আগাছা-জঙ্গলের মধ্যে পড়ে রয়েছে বিমানটি। কৌতুহলী স্কুল পড়ুয়াদের দল দিনের বেলা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে বিমানটিকে দেখার জন্য উঁকি মারলেও বিমানটির কাছে যাওয়ার বা খুটিনাটি জানবার যেন উপায় নেই। আর সূর্য ডোবার পর দীপক থাকে যেন কার্যত অন্ধকারে। শত চেষ্টার পর ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান বালুরঘাটে আনার পর তা নবপ্রজন্মের কাছে প্রদর্শনের জন্য কেন সাংসদ তহবিলের অর্থ বরাদ্দ করা হল না তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই বালুরঘাটের বাসিন্দারা বলতে শুরু করেছে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান শুধুমাত্র অর্থাভাবের কারনে এভাবে পড়ে রইবে এই লজ্জা আমাদের। জেলা সৈনিক বোর্ডের ওয়েল ফেয়ার অর্গানাইজার হেমন্ত কুমার মুখার্জি জানিয়েছেন বিমানটিকে স্থাপনের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়ে সাংসদ তহবিলের অর্থের জন্য আবেদন করা হয়েছিল, সাংসদকেও বলা হয়েছিল, ফাইল পড়ে থাকে, এরপর ফাইল ফেরৎ চলে আসে। তিনি বলেন নির্বাচনের পর যেই সাংসদ হোক না কেন, তাকে বলতে হবে। তিনি এও বলেন প্রথমে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার এস্টিমেট করে পাঠানো হয়েছিল, এখন খরচ বেড়ে যাবে, ৬-৭ লক্ষ টাকা লাগবে।